স্যার আমি ২২ তম ব্যাচের স্টুডেন্ট পার্ট ১ পাশ করেছি সার্জারী তে ৩.৫ বছর ট্রেইনিং করছি। আমার আবার ২৮ এডিশন এর বেইলি লাভ নিয়ে আপনার সামনে বসে ক্লাস করতে ইচ্ছা করছে। জানি অনেক কিছু নতুন শিখতে পারবো৷ অনেক অনেক শুভ কামনা প্রিয় স্যার
ডাঃ দিলীপ কুমার নাথ
নির্বাহী পরিচালকপোস্টগ্র্যজুয়েট মেডিকেল একাডেমী
ডাঃ দিলীপ কুমার নাথ জেনারেল সার্জারিতে এফসিপিএস এর ফাইনাল পার্টের ট্রেনিং এবং এক বছরের কোর্স সম্পন্ন করে স্থায়ীভাবে অধ্যাপনা কাজে নিজেকে নিযুক্ত করেন।
Biography
ডা. দিলীপ কুমার নাথ ১৯৬৩ সালের ডিসেম্বর মাসে চট্টগ্রামের চন্দনাইশে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা পূর্ণ চন্দ্র নাথ এবং মাতা চারুবালা দেবী। তিনি ছিলেন তাঁদের কনিষ্ঠতম সন্তান। শিক্ষাজীবনের সূচনা স্থানীয় একটি স্কুলে। ১৯৮১ সালে তিনি রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৮৩ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এরপর রংপুর মেডিকেল কলেজের ১৩তম ব্যাচে ভর্তি হন এবং ১৯৯০ সালে এমবিবিএস সম্পন্ন করে ইন্টার্নশিপ শেষ করেন। ১৯৯১ সালে তিনি একই মেডিকেল কলেজের ডা. দীপ্তি দেবী (১৫তম ব্যাচ) এর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর রংপুর ও ঢাকার বিভিন্ন ক্লিনিকে প্রায় চার বছর কাজ করার পর ঢাকার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগে ৫-৬ বছর শিক্ষকতা করেন। ঐ সময় তিনি এমবিবিএস স্টুডেন্টের জন্য 'Medical Orientation Center' প্রতিষ্ঠা করে বিরতিহীন ভাবে ১১বছর পাঠদান করেন। পরবর্তীতে তিনি জেনারেল সার্জারিতে এফসিপিএস ফাইনাল পার্টের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং পিজি হাসপাতালে এক বছরের কোর্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি স্থায়ীভাবে অধ্যাপনার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন। দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন পোস্টগ্র্যাজুয়েট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও অভিজ্ঞতা অর্জনের পর, ২০০৪ সালে তিনি "Postgraduate Medical Academy" প্রতিষ্ঠা করেন। ডা: দীপ্তি দেবী এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর একক শিক্ষকতায় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫০,০০০-এরও বেশি চিকিৎসক এই কোর্স সম্পন্ন করেন। তাঁদের অনেকেই দেশে ও বিদেশে চিকিৎসা পেশায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন।
উনার একমাত্র সন্তান, ডা. প্রদীপ্ত দেবনাথ, ইংল্যান্ডের University of Nottingham School of Medicine থেকে অনার্সসহ স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং Vice Chancellor’s Medal-এ ভূষিত হন। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের Cincinnati Children’s Hospital-এ Pediatric Radiology-তে রিসার্চ ফেলোশিপ সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি Emory University এর Radiology তে Resident হিসেবে কর্মরত আছেন।
My Vision & Mission
আমার শিক্ষকতা নিয়ে প্রায় সবারই একটা প্রশ্ন -
"পোস্টগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে এতগুলো ডিসিপ্লিনের এতগুলো বিষয় একজন মানুষের পক্ষে পড়ানো কীভাবে সম্ভব?"
নীচের লেখাগুলো পড়লেই যে কেউ সহজেই ধারণা করতে পারবেন যে, একজন মানুষের পক্ষে এতগুলো বিষয় পড়ানো সম্পূর্ণ সম্ভব।
১৯৯৯ সালে উত্তরায় অবস্থিত "মেডিকেল কলেজ ফর উইমেন এন্ড হসপিটাল" এ সার্জারি বিভাগের পঞ্চম বর্ষের ছাত্রীদের সার্জারি পড়ানোর দায়িত্ব গ্রহণের পর ঐ বছর ফাইনাল পরীক্ষায় অসাধারণ ফলাফল হয়। এর ফলে, ছাত্রীরা আমার পড়ানোর ধরনে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হয় এবং কালবিলম্ব না করে ক্রমান্বয়ে গাইনী ও মেডিসিন বিষয়েও আমাকে পড়ানোর দায়িত্ব অর্পণ করে। পরবর্তীতে, প্যাথোলজি, মাইক্রোবায়োলজি, ফার্মাকোলজি, কমিউনিটি মেডিসিন, ফরেনসিক মেডিসিন এবং সর্বশেষে এনাটমি ও ফিজিওলজি পড়ানোর দায়িত্বও আমাকে নিতে হয়েছিল।
সেই সময় ঢাকার উত্তরে নবপ্রতিষ্ঠিত মেডিকেল কলেজগুলোর পাশাপাশি অন্যান্য কিছু মেডিকেলের ছাত্র-ছাত্রীরাও আমাকে শিক্ষক হিসেবে সহজেই গ্রহণ করে। এর ফলে, আমি "Medical Orientation Center" প্রতিষ্ঠা করি এবং এর মাধ্যমে প্রায় ১০-১১ বছর ধরে এমবিবিএস কোর্সের প্রতিটি বিষয়ের পাঠদান করি।
সংক্ষেপে বলতে গেলে, বর্তমানে পোস্ট-গ্র্যাজুয়েশন প্রস্তুতির জন্য ডাক্তারদের পড়ানোর ক্ষেত্রে আমার মূল অভিজ্ঞতার ভিত্তি হলো—
"১০-১১ বছর ধরে মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত প্রতিটি কার্ডের প্রতিটি আইটেম বিশদভাবে পড়ানো, পাশাপাশি পঞ্চম বর্ষের শর্ট/লং কেসসহ সকল বিষয়ে শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতা।"
আমার এই শিক্ষকতার মাঝপথে আমি এফসিপিএস পার্ট ১ জেনারেল সার্জারিতে পাশ করার পর উপলব্ধি করলাম Postgraduation পরীক্ষায় পাশের জন্য সবচেয়ে বড় প্রয়োজন একটা সুন্দর গাইড লাইন যার অভাবে আমার নিজের পাশ করতে অনেক সময় নষ্ট হয়ে গেল তাই আমি ডাক্তারদের এই মূল্যবান সময় নষ্ট না হওয়ার চিন্তা করে Postgraduation এ ভর্তির জন্য গাইড লাইন দেওয়ার চিন্তা প্রথম মাথায় আসে। তখন এমবিবিএস ছাত্রদের পড়ানোর পাশাপাশি Postgraduation এ ভর্তির জন্য ডাক্তারদের ক্লাস করানো শুরু করি। কিন্তু জেনারেল সার্জারি ছাড়াও ডাক্তাররা যখন অন্যান্য সাবজেক্ট পড়ানোর জন্য আমাকে অনুরোধ করতে থাকে তখন আমি ঐ সব সাবজেক্ট পড়ানো শুরু করার আগে নিজে পরীক্ষাগুলো দেওয়ার মনস্হির করি। তখন মেডিসিন, সার্জারীর বিভিন্ন ব্রান্স, অবস্ ও গাইনীসহ বিভিন্ন সাবজেক্ট পার্ট-১ পরীক্ষা দিতে থাকি। ঐ সময় পেন কার্ড সিস্টেম ছিল না বিধায় বিভিন্ন সাবজেক্টে পরীক্ষা দেতে অসুবিধা হয়নি। তাছাড়া আমি দেশের বাইরে কিছু পরীক্ষা - যেমন USMLE STEP - 1 & 2, MRCP(P-1), MRCS (P-1) পরীক্ষা দিয়েছিলাম শুধুমাত্র নিজেকে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত করা যাতে ডাক্তারদেরকে সহজে বিভিন্ন সাবজেক্টে গাইড দেওয়া সম্ভব হয়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন মনে করি - উপরোক্ত সাবজেক্ট ছাড়াও আমি অনেক সময় পরীক্ষার হলে গিয়ে বিভিন্ন সাবজেক্টে পরীক্ষা দিয়েছিলাম শুধুমাত্র ডাক্তারদেরকে কিভাবে পড়াব বা গাইড দিব সেটার ধারনা নেওয়ার জন্য। পাশাপাশি আমি জেনারেল সার্জারিতে ট্রেনিং এবং কোর্স শেষ করে অর্থাৎ ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার সব প্রি-কন্ডিশন শেষ করেও আর অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি কারণ তখন আমার একাডেমীতে প্রতি বছর প্রায় তিন থেকে চার হাজার ডাক্তার ভর্তি হত। এত পরিমান ডাক্তারকে আমি একা গাইড দিতে গিয়ে আমার আর নিজের জন্য পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
ঐ সময়ে আমি ডাক্তারদের পোস্টগ্র্যাজুয়েশনে ভর্তির জন্য গাইড দেওয়াকে আমার জীবনের একমাত্র পেশা হিসেবে গ্রহণ করি এবং ২০০৪ সালে 'Dilip Kumar's Postgraduate Medical Academy (DKPGMA)' প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ডাক্তারদের জন্য পোস্টগ্র্যাজুয়েট ভর্তির কোর্স শুরু করি। করোনা মহামারির পূর্ব পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ১৮ বছরে প্রায় ৫০ হাজার ডাক্তারকে পড়ানোর তথা সেবা করার সুযোগ পেয়েছি, যা আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের এবং সৌভাগ্যের বিষয়।
তাছাড়া ডাক্তারদেরকে ক্লাস করানোর সময় আমি আমার অতীত জীবনের অভিজ্ঞতা ওদের সঙ্গে সবসময় শেয়ার করি - উদ্দেশ্য ডাক্তারদেরকে ভবিষ্যত সুন্দর জীবন নিয়ে আশ্বস্ত করা। এই অভিজ্ঞতা আমি আমার ডাক্তারি জীবনের শুরুতে বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে কাজ করার সময় অর্জন করেছিলাম। তখনকার সময়ের আমার কর্মক্ষেত্রের সামান্য বর্ণনা নিম্নরূপ:
রংপুর মেডিকেল কলেজে ইন্টার্নশিপ শেষ করে রংপুর শহরে আরও প্রায় দুই বছর থাকতে হয়েছিল কারণ আমার স্ত্রী ডা: দীপ্তি দেবীকে রংপুর মেডিকেল থেকে পাশ এবং ইন্টার্নশিপ সমাপ্ত করতে হয়েছিল। ঐ দুই বছর রংপুরে ক্লিনিকে চাকরি করি এবং USMLE পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে থাকি। ১৯৯৩ সালের শেষের দিকে আমরা ঢাকায় চলে আসি। ঢাকায় শুরুতে ক্লিনিক বা হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেতনে চাকরি পাওয়া একটু কঠিন ছিল। মালিবাগের ভূঁইয়া ক্লিনিকে প্রফেসর মবিন খান স্যারের সান্নিধ্যে থাকা আমার ভাগ্যের ব্যাপার ছিল। এরপর বাংলাদেশের প্রথম ক্লিনিক "আরোগ্য নিকেতন" এ অভিজ্ঞ প্রফেসরের অধীনে কাজ করা ছিল জীবনের শ্রেষ্ঠ সুযোগ। মগবাজারস্থিত কে সি মেমোরিয়াল ক্লিনিকে প্রফেসর বি চৌধুরীর স্যারের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে প্রায় তিন বছর কাজ করা অবশ্যই জীবনের স্মরণীয় ঘটনা। উক্ত ক্লিনিকের সার্জারি প্রফেসর আনিসুল হক আমাকে "মহিলা মেডিকেল কলেজ" উত্তরাতে চাকরির সুযোগ করে দিয়ে সারা জীবনের জন্য স্যার আমাকে কৃতজ্ঞতার বন্ধনে আবদ্ধ করলেন - যে কলেজ থেকে আমার চিকিৎসা শাস্ত্রে শিক্ষকতার কাজটি শুরু হয়। এর আগে হাসপাতালে চাকরির পাশাপাশি ধানমন্ডিতে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ও/এ লেবেলে বায়োলজি/হিউম্যান বায়োলজি বিষয়ে কিছু সময় শিক্ষকতাও করি।
পরিশেষে সংক্ষিপ্ত রূপে বলা যায় - আমার এই পোস্টগ্র্যাজুয়েট একাডেমির মূল উদ্দেশ্য হল - এমবিবিএস পাস করে যেসব ডাক্তারগণ এখানে ভর্তি হয়ে মনোযোগ দিয়ে কোর্সটি সম্পন্ন করবেন, তাদের জীবনের বেশ কিছু সময় এগিয়ে যাবে আমি মনে করি এবং পরবর্তীতে ঐ ডাক্তারদের Part 2/Phase B এর পড়াশোনা বুঝতে তেমন অসুবিধা হবে না। সর্বোপরি, মেডিকেল সাইন্সকে কঠিন মনে করার আর কোনো কারণ থাকবে না।
বর্তমানে এই কোর্সটি আরও বেশি ডাক্তারদের সান্নিধ্যে নিয়ে আসার জন্য, অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনে কোর্স চালু করার উদ্যোগ নিয়েছি।
অফলাইন ক্লাসের ডাক্তারদের কিছু ছবি
Postgraduate Medical Academy-কে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রতিভাবান এবং দক্ষ একটি ডাইনামিক টিম। সবার জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষা সহজলভ্য করার লক্ষ্যে Dr. Dilip Sir-এর সাথে আছেন বিখ্যাত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অসংখ্য স্বনামধন্য তত্ত্বাবধায়ক।
কেন পোস্টগ্র্যজুয়েট মেডিকেল একাডেমী ?
গত ২৪ বছর একক শিক্ষকতায় ৫০ হাজার+ ডাক্তারকে এই কোর্স করানোর অভিজ্ঞতা